মাশরাফি বিন মুর্তজা
প্রথম যখন বল হাতে নিই, বুক একটুও কাঁপেনি। মনে হয়নি, আবার যদি পড়ে যাই! আবার যদি চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়! এর আগে ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফেরার সময় এই ভয়টা হয়েছে। এবার কেন জানি হয়নি। একটু ঝুঁকি নিলেই সবাই ‘সাবধান সাবধান’ বলে সতর্ক করে দিয়েছে। তবে আমার মনে এবার ও-রকম কিছু আসেনি।
বিমানের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা ছাড়াই চারটা ম্যাচ খেললাম। ভয় না থাকলেও প্রথম ম্যাচে একটু জড়তা ছিল, এতদিন পর ফিরছি...। প্রথম বলটা করার পর সেই জড়তাও কেটে যায়। ফিজিও আর বোলিং কোচের পরামর্শমতো আস্তে আস্তে পেস বাড়িয়েছি। সর্বশেষ ম্যাচটাতে তো কিছু বাউন্সারও দিলাম!
তবে লম্বা বিরতির পর ফিরেছি বলে এখনো বাড়তি কিছু করার চেষ্টা করছি না। রানআপে ছন্দ ঠিক রাখা, জায়গামতো বল ফেলা, লাইন-লেংথ ঠিক রাখা—এসবের ওপরই জোর দিচ্ছি বেশি। চার ম্যাচে ২৫ ওভার বল করে এই জায়গাটাতে নিজেকে সফলই বলব। অ্যাকশনে সামান্য পরিবর্তন আনায় কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা হচ্ছে। তবে যা করতে চেয়েছি, তা করতে পেরেছি বলে আত্মবিশ্বাসও বাড়ছে।
আমার জন্য সবচেয়ে ভালো হয়েছে ফিল্ডিংয়ে প্রায় পুরোটা সময় মাঠে থাকা। শুধু তো ১০ ওভার বল করাই কাজ নয়, ফিল্ডিংটাও খেলার অংশ। আর ৫০ ওভার মাঠে থাকতে পারলে ফিটনেসটারও পরীক্ষা হয়ে যায়। চার ম্যাচের প্রায় পুরোটাই ফিল্ডিং করতে পেরেছি মানে ফিটনেসে সমস্যা নেই। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচ ফিটনেসের ওপর আর কিছু নেই। এ ছাড়া ব্যাটিংটাও খুব উপভোগ করছি। অনেক দিন ব্যাটিং করিনি। এক-দুটি বড় ইনিংস খেলার ইচ্ছা ছিল। সেটা না পারলেও যতক্ষণ উইকেটে ছিলাম, ভালোই লেগেছে।
আমি অবশ্য বেশি জোর দিচ্ছি বোলিংয়েই। প্রতিটি ম্যাচের পরই আরও ৬ ওভার বল করেছি। বোলিং শুরু করার পর থেকে প্রায় ১০০ ওভারের মতো বল করে ফেলেছি। বিপিএলেও পরিকল্পনা আছে, ম্যাচের ৪ ওভারের বাইরে প্রতিদিন বাড়তি ৬ ওভার করে বল করা। সে ক্ষেত্রে এশিয়া কাপের আগে দুই-আড়াই শ ওভার বল করা হয়ে যাবে। এটা যদি ঠিকঠাকভাবে করে যেতে পারি এবং সঙ্গে দু-একটা প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলি, আশা করি, এশিয়া কাপের আগেই আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার মতো অবস্থায় চলে আসব।
প্রিমিয়ার লিগের মতো বিপিএলও আমার ভালোভাবে খেলায় ফেরায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে আশা করি। বিপিএলে আমি ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের অধিনায়ক। এর আগে জাতীয় দলের অধিনায়কও হয়েছিলাম। এর পরের ঘটনা তো আপনাদের জানা-ই। অধিনায়কত্ব তাই আমাকে আর আবেগতাড়িত করে না। নানা বিপর্যয় মেনে নিতে নিতে আমার এখন এমন অবস্থা, অনেক সময় অনুভূতি জিনিসটাই যেন খুঁজে পাই না। আর ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের অধিনায়ক আমি যত না নিজের ইচ্ছায় হয়েছি, তার চেয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের ইচ্ছাতেই বেশি।
ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস আমার ওপর আস্থা রেখেছে, সে জন্য ধন্যবাদ। তবে আমার কাছে অধিনায়কত্বের চেয়ে ভালো খেলাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পারফর্ম করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়াটাকেই আমি অধিনায়কত্বের মূল কাজ বলে মনে করি।
দল হিসেবে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস খুবই ভালো, বলতে পারেন বিপিএলের সেরা দলটাই আমাদের। অভিজ্ঞতা আর তারুণ্যের মিশেলে আমাদের দলটা খুব ব্যালান্সড। তবে টি-টোয়েন্টিতে মিডল অর্ডারকেই দায়িত্ব নিতে হবে বেশি। বোলিংয়েও বৈচিত্র্য আছে। আমাদের সাফল্যের অনেকটাই নির্ভর করছে এই কন্ডিশনে এসে বিদেশি খেলোয়াড়দের দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার ওপর। সঙ্গে দেশি খেলোয়াড়েরা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলেই হবে। আমাদের আশরাফুল আছে। ফর্মে থাকলে ওর চেয়ে ভালো আর কে আছে!
বিপিএল নিয়ে একটা কথা বলে শেষ করতে চাই। অনেকেই বিপিএলকে বাঁকা চোখে দেখছে। আমিও মানি, সবার আগে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট। ক্রিকেট-উন্নত দেশ হতে হলে দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটেই জোর দিতে হবে বেশি। দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে ভালো হলে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিতে খেলা এমনিতেই ভালো হবে। কিন্তু তাই বলে বিপিএলকে বাঁকা চোখে দেখার কিছু নেই।
আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের ড্রেসিংরুমে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছিল আমার। কাছ থেকে দেখেছি বড় বড় খেলোয়াড়দের চালচলন। আমাদের দেশের সব ক্রিকেটারের পক্ষে তো আইপিএলে খেলা সম্ভব নয়। বিপিএল তাদের সেই সুযোগ করে দেবে। একই ড্রেসিংরুমে থেকে তারা দেখবে ক্রিস গেইল, মুত্তিয়া মুরালিধরন, সনাৎ জয়াসুরিয়াদের। তাদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে। আর কিছু না হোক, এটাই বা কম কী!
বিমানের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা ছাড়াই চারটা ম্যাচ খেললাম। ভয় না থাকলেও প্রথম ম্যাচে একটু জড়তা ছিল, এতদিন পর ফিরছি...। প্রথম বলটা করার পর সেই জড়তাও কেটে যায়। ফিজিও আর বোলিং কোচের পরামর্শমতো আস্তে আস্তে পেস বাড়িয়েছি। সর্বশেষ ম্যাচটাতে তো কিছু বাউন্সারও দিলাম!
তবে লম্বা বিরতির পর ফিরেছি বলে এখনো বাড়তি কিছু করার চেষ্টা করছি না। রানআপে ছন্দ ঠিক রাখা, জায়গামতো বল ফেলা, লাইন-লেংথ ঠিক রাখা—এসবের ওপরই জোর দিচ্ছি বেশি। চার ম্যাচে ২৫ ওভার বল করে এই জায়গাটাতে নিজেকে সফলই বলব। অ্যাকশনে সামান্য পরিবর্তন আনায় কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা হচ্ছে। তবে যা করতে চেয়েছি, তা করতে পেরেছি বলে আত্মবিশ্বাসও বাড়ছে।
আমার জন্য সবচেয়ে ভালো হয়েছে ফিল্ডিংয়ে প্রায় পুরোটা সময় মাঠে থাকা। শুধু তো ১০ ওভার বল করাই কাজ নয়, ফিল্ডিংটাও খেলার অংশ। আর ৫০ ওভার মাঠে থাকতে পারলে ফিটনেসটারও পরীক্ষা হয়ে যায়। চার ম্যাচের প্রায় পুরোটাই ফিল্ডিং করতে পেরেছি মানে ফিটনেসে সমস্যা নেই। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচ ফিটনেসের ওপর আর কিছু নেই। এ ছাড়া ব্যাটিংটাও খুব উপভোগ করছি। অনেক দিন ব্যাটিং করিনি। এক-দুটি বড় ইনিংস খেলার ইচ্ছা ছিল। সেটা না পারলেও যতক্ষণ উইকেটে ছিলাম, ভালোই লেগেছে।
আমি অবশ্য বেশি জোর দিচ্ছি বোলিংয়েই। প্রতিটি ম্যাচের পরই আরও ৬ ওভার বল করেছি। বোলিং শুরু করার পর থেকে প্রায় ১০০ ওভারের মতো বল করে ফেলেছি। বিপিএলেও পরিকল্পনা আছে, ম্যাচের ৪ ওভারের বাইরে প্রতিদিন বাড়তি ৬ ওভার করে বল করা। সে ক্ষেত্রে এশিয়া কাপের আগে দুই-আড়াই শ ওভার বল করা হয়ে যাবে। এটা যদি ঠিকঠাকভাবে করে যেতে পারি এবং সঙ্গে দু-একটা প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলি, আশা করি, এশিয়া কাপের আগেই আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার মতো অবস্থায় চলে আসব।
প্রিমিয়ার লিগের মতো বিপিএলও আমার ভালোভাবে খেলায় ফেরায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে আশা করি। বিপিএলে আমি ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের অধিনায়ক। এর আগে জাতীয় দলের অধিনায়কও হয়েছিলাম। এর পরের ঘটনা তো আপনাদের জানা-ই। অধিনায়কত্ব তাই আমাকে আর আবেগতাড়িত করে না। নানা বিপর্যয় মেনে নিতে নিতে আমার এখন এমন অবস্থা, অনেক সময় অনুভূতি জিনিসটাই যেন খুঁজে পাই না। আর ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের অধিনায়ক আমি যত না নিজের ইচ্ছায় হয়েছি, তার চেয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের ইচ্ছাতেই বেশি।
ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস আমার ওপর আস্থা রেখেছে, সে জন্য ধন্যবাদ। তবে আমার কাছে অধিনায়কত্বের চেয়ে ভালো খেলাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পারফর্ম করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়াটাকেই আমি অধিনায়কত্বের মূল কাজ বলে মনে করি।
দল হিসেবে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস খুবই ভালো, বলতে পারেন বিপিএলের সেরা দলটাই আমাদের। অভিজ্ঞতা আর তারুণ্যের মিশেলে আমাদের দলটা খুব ব্যালান্সড। তবে টি-টোয়েন্টিতে মিডল অর্ডারকেই দায়িত্ব নিতে হবে বেশি। বোলিংয়েও বৈচিত্র্য আছে। আমাদের সাফল্যের অনেকটাই নির্ভর করছে এই কন্ডিশনে এসে বিদেশি খেলোয়াড়দের দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার ওপর। সঙ্গে দেশি খেলোয়াড়েরা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলেই হবে। আমাদের আশরাফুল আছে। ফর্মে থাকলে ওর চেয়ে ভালো আর কে আছে!
বিপিএল নিয়ে একটা কথা বলে শেষ করতে চাই। অনেকেই বিপিএলকে বাঁকা চোখে দেখছে। আমিও মানি, সবার আগে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট। ক্রিকেট-উন্নত দেশ হতে হলে দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটেই জোর দিতে হবে বেশি। দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে ভালো হলে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিতে খেলা এমনিতেই ভালো হবে। কিন্তু তাই বলে বিপিএলকে বাঁকা চোখে দেখার কিছু নেই।
আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের ড্রেসিংরুমে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছিল আমার। কাছ থেকে দেখেছি বড় বড় খেলোয়াড়দের চালচলন। আমাদের দেশের সব ক্রিকেটারের পক্ষে তো আইপিএলে খেলা সম্ভব নয়। বিপিএল তাদের সেই সুযোগ করে দেবে। একই ড্রেসিংরুমে থেকে তারা দেখবে ক্রিস গেইল, মুত্তিয়া মুরালিধরন, সনাৎ জয়াসুরিয়াদের। তাদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে। আর কিছু না হোক, এটাই বা কম কী!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন